দক্ষিণ কোরিয়া নর'কের মত কেন?

"Life is not supposed to be end with marriage and child"- View of young generation of South Korea.

দক্ষিণ কোরিয়ার বিপুল সংখ্যক তরুণ-তরুণী বিয়ে করতে চায় না বা সন্তান গ্রহণ করতে চায় না। যদিও উন্নতবিশ্বে এটা স্বাভাবিক তবে দক্ষিণ কোরিয়ার ক্ষেত্রে এটা বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে কারণ কোরিয়াতে মহিলা পিছু মাত্র ০.৮১ টি সন্তান রয়েছে। জনসংখ্যা দ্রুত কমে যাওয়াটা অর্থনীতির জন্য এবং অবসরপ্রাপ্ত মানুষদের জন্য অশনিসংকেত বটে কারণ করদাতা কমছে কিন্তু অবসর ভাতা ভোগী মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। যদিও শিশুর সংখ্যা বাড়ানোর জন্য দক্ষিণ কোরিয়া গত ১০ বছরে ২১০ বিলিয়ন ডলারের বিশাল অংক ব্যয় করেছে কিন্তু ফলাফল নেতিবাচক বটে।

কোরিয়ান তরুণ-তরুণী বলছে তাদের পিতামাতা এবং দাদা দাদির মতো তারা পরিবার গঠনের কোন আগ্রহ বোধ করে না কারণ দক্ষিণ কোরিয়াতে চাকরিতে অত্যধিক প্রতিযোগিতা, উচ্চ অংকের বাড়িভাড়া ছাড়াও লিঙ্গ বৈষম্য এবং সামাজিক বৈষম্য খুবই বেশি। কেউ কেউ বলছে শিশু বড় করে তোলার ব্যয় অত্যধিক। মেয়েরা বলছে যে, কেবল তারাই সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব নেবে এটাই সকলে আশা করে থাকে অথচ কর্মক্ষেত্রে পুরুষ সহকর্মীর তুলনায় মেয়েদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়।

জনসংখ্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ লি সো বলেন, জনসাধারণ মনে করে যে কোরিয়ার জীবনযাত্রা খুবই কঠিন এবং ব্যয়বহুল, তারা আরও মনে করে যে তাদের সন্তানদের জীবনযাত্রা হবে আরও কঠিন সুতরাং অযথা কঠিন পরিস্থিতিতে সন্তানদের ফেলে কি লাভ?

'যে সমস্ত তরুন-তরুনীর সন্তান রয়েছে তাদের অনেকে ভালো স্কুলে ভর্তি হতে পারেনি তাই ভালো চাকরি পাবে না সুতরাং তাদের সন্তানরা সমাজচ্যুত হয়েছে এবং তারা সুখী হতে পারবে না'- অনেক দক্ষিণ কোরীয় যুবক-যুবতী এমনটাই ভেবে থাকে। ।

১৯৯৬ সালে চার লক্ষ ত্রিশ হাজার বিয়ে হলেও গত বছর মাত্র এক লক্ষ তিরানব্বই হাজার বিয়ে হয়েছে আর শিশু জন্মের সংখ্যা ১৯৯৬ সালের তুলনায় প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নেমে এসেছে। একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে কাজ করা মেয়ে উ ইয়ং বলেন, আমি একটা বাচ্চা নিতে চেয়েছিলাম কিন্তু আমার নারী সহকর্মীদের তাদের বাচ্চার জন্য সর্বদা উদ্বিগ্ন থাকতে দেখি এবং বাচ্চার অসুস্থতা এবং অন্যান্য কারণে ছুটি নিতে দেখি কিন্তু পুরুষ সহকর্মীদের এটা করতে হয় না তাই আমি বাচ্চা নিতে আগ্রহ হারিয়েছি। তার স্বামী জুন হি বলেন, আমি একটি ইনফরমেশন টেকনোলজি কোম্পানিতে চাকরি করি এবং আমার সর্বদা মনে হয় যেন আমি একটা গভীর খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে রয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে কি করে বাচ্চা নেওয়া যায়?